শাইখ আহমেদ, ভেনিস, ইতালিঃ
বাঙালির ঐতিহ্য পিঠা পার্বণের আনন্দধারা ও বাঙালির সংস্কৃতি ধরে রাখতে গত ২১শে জানুয়ারি রোজ শনিবার আর টিভি ইতালি প্রতিনিধি আসলামউজ্জামান মোহাম্মদ ও এটিএন বাংলা ভেনিস প্রতিনিধি নাজমুল হোসেন এর সার্বিক পরিচালনায় ও স্থানীয় সাংবাদিকগণ সহ ভেনিস বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতায় ইতালির ভেনিসে অবস্থিত ঢাকা বিরিয়ানি হাউজের স্থানীয় হলরুমে শীতকালীন পিঠা মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
মেলায় মোট ১৭ টি স্টল জুড়ে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অর্ধ শতাধিক রকমের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন জেলার বাংলাদেশী প্রবাসী পিঠাশিল্পীরা। পিঠা মেলার স্টলগুলোর দিকে তাকাতেই জিভে জল এনেছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, ঝাল পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুরের পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জিলাপি, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, সূর্যমুখী পিঠা, ফুল পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ বাহারি নকশার অর্ধ শতাধিক পিঠা। দিনব্যাপী পিঠা মেলায় ভিড় জমান বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রবাসী বাঙালিরা।
নিরপেক্ষ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ ৫ জন বিচারকমন্ডলী যথাক্রমে শাইখ আহমেদ, কামরুল হাসান রাসেল, মহিউদ্দিন মহি, মনির উদ্দিন এবং স্বপন মিয়া’র স্বচ্ছ বিচারকার্যের মাধ্যমে পিঠা মেলায় অংশগ্রহণকারী ১৭ টি স্টলের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন কুটুমবাড়ি পিঠা বিলাশ, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন মহিলা সোসাইটি ভেনিস এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন আবদুল্লাহপুর গ্রামবাসী। বিজয়ী প্রথম তিন স্টলগুলোকে পদক ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বিশেষ ক্যাটাগরিতে অবদান রাখায় ট্রাভেল টক স্টল এবং সিমা’স কিচেন স্টলকে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়ার পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী সকল স্টলগুলোকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
পিঠা মেলার পুরো সময় জুড়ে ভেনিস বাংলা মিউজিক এর পরিবেশনায় এবং স্থানীয় শিল্পীদের সমন্বয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন মেলায় আগত অতিথিবৃন্দ এবং দর্শনার্থীরা। উক্ত শীতকালীন পিঠা মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা ও পরিচালনায় বিশেষ অবদান রাখেন ভেনিস বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ সহ কমিউনিটির সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
জাতীয় ও নিজস্ব সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম এই পিঠা মেলা মনে ধারণ ও লালনের পাশাপাশি প্রবাসে নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির সমুন্নত ঐতিহ্যকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস নিয়েই মূলত এই আয়োজন।
মেলায় আগত অতিথিবৃন্দ এবং দর্শনার্থীরা বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার বাহারি পিঠা।প্রবাসে যান্ত্রিক জীবনে সেই স্বাদ নেওয়ার সুযোগ আমাদের খুবই কম। তাই এরকম ব্যতিক্রমী আয়োজন উপভোগ করতে পেরে আমরা খুবই মুগ্ধ এবং অভিভূত।