সরকারের নির্বাহী আদেশে আবারো পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নতুন মূল্য অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ (০-৫০ ইউনিট) ব্যবহারকারীদের জন্য আগের চেয়ে ইউনিট প্রতি ২০ পয়সা বেড়েছে।
প্রজ্ঞাপনে গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ ও পাইকারিতে আট শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এনিয়ে গত ১৪ বছরে ১২ বারের মতো গ্রাহক পর্যায়ে বাড়লো বিদ্যুতের দাম। এছাড়া ১৪ বছরে এটি ছিল ১১তম দফায় পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি।
প্রজ্ঞাপনে গৃহস্থালির খুচরা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে ৪ টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৬২ পয়সা করা হয়েছে। ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৩১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা করা হয়েছে।
এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ পর্যন্ত ইউনিট ১০ টাকা ৪৪ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ষষ্ঠ ধাপে ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৩৬ পয়সা করা হয়েছে।
এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।
এর আগে গত ১২ই জানুয়রি এক নির্বাহী আদেশে দেশে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা বাড়ানো হয়েছিল। যা পহেলা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। একইসঙ্গে এখন থেকে প্রতিমাসে বিদ্যুতের খুচরা দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হবে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উলেখ করা হয়েছিল।
দেশে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকই গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। পহেলা ফেব্র“য়ারি থেকে ওই সব কেন্দ্রের জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ১৪ টাকায় কিনতে হবে। গ্যাসের দাম এক লাফে প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।
গত (রোববার) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সংশোধন বিল ২০২৩ এর অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় সংসদ। বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্র্নিধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।