সোমবার ভোর। ঘড়ির কাঁটায় সময় ৪টা। সবাই ঘুমে বিভোর। সেই মুহূর্তে ভয়াবহ আকারে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.৮। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
কম্পনের উৎসস্থল দক্ষিণ তুরস্কে। গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে।
১৯৩৯ সালের পর তুরস্ক এমন ভয়াবহ ভূকম্প দেখেনি। ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়া। উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক মৃতদেহ। কোনও কোনও পরিবারে সকল সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। শোকপালন করবেন বলেও আত্মীয়-পরিজন নেই অনেকের।
ভেঙে পড়েছে বহু বাড়িঘর। ধ্বংসস্তূপের তলায় এখনও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট বাহিনী। সাধারণ মানুষও এতে হাত লাগিয়েছেন।
এই ঘটনা তুরস্কবাসীদের ১৯৩৯ সালের ভূমিকম্পের স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। সেই ভূকম্পের ফলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। সবাইকে একসঙ্গে এই বিপদ মোকাবেলা করবেন বলে বার্তা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ভূমিকম্পের পর সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, কাহারামানমারাসে যে ভূমিকম্প হয়েছে এবং আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুভূত সকল নাগরিকদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আমাদের সকল প্রাসঙ্গিক ইউনিট এএফএডি এর পরিচালনায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল প্রেরণ করা হয়েছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এএফএডি, গভর্নর এবং অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠান দ্রুত কাজ শুরু করেছে।
এরদোয়ান বলেন, ভূমিকম্পের পর শুরু কাজগুলো আমরা সমন্বয় করছি। আমরা আশা করি যে আমরা যে দুর্যোগ সম্মুখীন হচ্ছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এবং সর্বনিম্ন ক্ষতির সঙ্গে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠব। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
তুরস্কের কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, গাজিয়ানটেপ, সানলিউরফা, দিয়ারবাকির, মালতায়া এবং আদানাসহ বিভিন্ন অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সিরায়ার আলেপ্পো, হামা এবং লাত্তাকিয়াসহ কয়েকটি অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশ দুর্যোগ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।