২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৭
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৭

ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ৪৩৭২

তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে চার হাজার ৩৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

এসব মানুষের বেশিরভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের অভিযান চলছে। খবর সিএনএনের।

তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ইউনুস সেজার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দুই হাজার ৯২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি আরও বলেছেন, এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৮৩৪ জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্যদিকে সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৫১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহতাবস্থায় তিন হাজার ৫৩১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) দেওয়া তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী এ ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশিরভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিলেন। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা এত বেশি।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশটির অন্য সব শহর এবং পার্শ্ববর্তী সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশ লেবানন, সাইপ্রাস, ইসরাইলেও এ ভূকম্পন অনুভূত হয়।

এর পর কয়েকবার আফটার শক (পরাঘাত) আঘাত হানে। এগুলোর মধ্যে একটি ছিল ৬ দশমিক ৪ ও একটি ৬ দশমিক ৫ মাত্রার।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শহরে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে বাদ সেধেছে প্রতিকূল আবহাওয়া। শীতকালীন তুষারঝড়ের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তুষারে অনেক সড়ক ঢেকে গেছে।

ভূমিকম্পে তুরস্কে চার হাজার ৭৪৮টি ভবন ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় তুরস্কে দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটি ৮৪ বছরের মধ্যে এত বড় শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি।

তুরস্কে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো— কাহরামানমারাস, গাজিয়ানতেপ, সানলিউরফা, দিয়ারবাকির, আদানা, আদিয়ামান, মালত্য, ওসমানিয়ে, হাতায় ও  কিলিস।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করে এই বিপর্যয় মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।

এদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমিকম্পে সিরিয়ার আলেপ্পো, হামা, তারতুস প্রদেশে অসংখ্য ভবন ধসে পড়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে, আতঙ্কিত মানুষকে ছোটাছুটি করতে দেখা যাচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা যা জানা গেছে, সেটি পর্যাপ্ত নয়। এই সংখ্যা এখনকার তুলনায় আটগুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পের কারণে দেখা দেওয়া চরম মানবিক সংকট মোকাবিলায় তুরস্ক ও সিরিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইসরাইল, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ।

Facebook
Twitter
LinkedIn