২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৩
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৩

সাত বছরে সর্বনিম্ন রিজার্ভ

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আরও ১১৮ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার কমেছে। এতে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে, যা গত সাত বছরে সর্বনিম্ন। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের মানদণ্ড অনুযায়ী ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের অঙ্ক আরও ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার কম হবে। সংস্থাটির হিসেবে বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএমএফ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর সুদসহ আমদানির অর্থ পরিশোধ করে। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। দায় পরিশোধের মতো রিজার্ভ না থাকায় গত বছরের অক্টোবরে আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে চরম আর্থিক সংকটে থাকা শ্রীলংকা।

ব্যাংকারদের মতে, বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফেরাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগের মধ্যেও সংকট কাটেনি। নতুন এলসি কমলেও আগের দায় পরিশোধের চাপ রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। এ কারণে সংকট কাটছে না অর্থনীতিতে। পাশাপাশি রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় চাপ আরও বেড়েছে। তবে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগের কারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডলার সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ৭ বছর পর আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এসেছে রিজার্ভ। ২০১৭ সালের ২২ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। করোনার আগ পর্যন্ত ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামা করেছিল রিজার্ভ। কিন্তু করোনার প্রভাব শুরু হলে বিশ্ববাজারে সুদহার অনেক কমে আসে। তখন বিশ্বের অনেক দেশ বৈদেশিক ঋণ কমালেও বাংলাদেশ ব্যাংক বাড়ানোর সুযোগ করে দেয়।

মূলত, ২০২১ সালের মধ্যে রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে এমন পথ বেছে নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২১ সালের আগস্টে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল। তবে করোনা-পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেশির ভাগ জিনিসের দাম বেড়েছে। এরপর রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালের জুন শেষে ৪১ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার। গত এক বছরে ১৩ বিলিয়নের বেশি কমে বর্তমানে এ পর্যায়ে নেমে এসেছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn