২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। এর পরদিনই গতকাল মাছ-মাংসের বাজারসহ নিত্যপণ্যের দামে উত্তাপ দেখা গেছে।
ক্রেতা-জনসাধারণ বলছেন, বাজেটে যেমন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জন্য কিছু নেই তেমনিভাবে নিত্যপণ্যের দামও বাড়ায় কষ্ট বাড়ছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও বসুন্ধরা কাঁচাবাজার ঘুরে এই চিত্রই দেখা গেল। তবে বেশির ভাগ সবজির দাম ৭০ থেকে ৯০ টাকায়। যেকারণে বছরের বাকি দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে তাদের।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারের নিজস্ব গতিতেই দাম উঠানামা করছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ টাকা কেজিতে বেড়ে গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। ২০ টাকা কেজিতে বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি।
কারওয়ানবাজারের মুরগি বিক্রেতা রাশেদুল হাসান বলেন, বাজেটে সবকিছুর দাম বাড়ে। বাজেট যেন নিত্যপণ্যের দামে বেশি চাপ দেয়। গতকালকের চেয়ে মুরগি ১০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। যে কারণে আজকে ২০ টাকা কেজিতে বাড়াতে হয়েছে।
এদিকে গরুর মাংসের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের মাংস বিক্রেতা আয়ান বলেন, গরু আমরা বাজার বুঝে কিনে থাকি। কোনোদিন গরুর দাম বাড়ে আবার কমে। এখানে বাজেট বলে কিছু নেই। বাজারে বেশি গরু উঠলে একটু দাম কমে, কিন্তু গরু মার্কেটে কম এলে দাম বাড়ে। বাজার কখনো ভালো যায়, আবার কখনো খারাপ যায়।
কারওয়ানবাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকররিজীবী আসাদুল হাসান বলেন, বাজেটের পরদিন বেশির ভাগ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। মাছ মাংসের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজ, আদা সেগুলোর দামও বেশি।
নতুন অর্থবছরের বাজেট বিষয়ে তিনি বলেন, বাজারে বড়লোক আর ধনীদের সুবিধা দেওয়া হয়। আমাদের মতো বেতনভুক্ত কর্মচারীদের জন্য বাজেটে কিছুই থাকে না। আমরা চাকরি করি, বেতনের টাকা চলে যায় মাসের বাজার-সদাই করতে। আমার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না।
এদিকে বাজার ঘুরে আরও দেখা গেল, বাজারে বাগদা চিংড়ি ৮০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১১০০ টাকা, চিংড়ি মাঝারি ১৩০০ টাকা, প্রতি কেজি পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা, পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, দেশি কই ৭শ টাকা, তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, বাজারে মাছ নেই। আমরা মাছ না পেলে বেশি দামেই তো বিক্রি করতে হবে। গত সপ্তাহের চেয়ে সব ধরনের মাছের বাজার চড়া। সকল মাছের বাজারে দাম বেড়েছে ৫০-১০০ টাকা। আমরা তো কিনেই বিক্রি করি আমরা তো আর চাষ করি না। তাই যেমন কিনতে হয় আমাদের তেমনই বিক্রি করতে হয়।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৯০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, করলা ৯০ টাকা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে কেজি ৯০ টাকা, প্রতি কেজি পোটল ৯০ টাকা, ঢেঁড়স ৮৫ টাকা, ঝিঙে ৯০ টাকা, টমেটো কেজি ৯০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, শসা ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া (পিস) ৭০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বসুন্ধরা কাঁচাবাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতা সালাম মিয়া বলেন, সবজির দাম আগের মতোই আছে। বাজেটে সবজির দামে প্রভাব পড়েনি। আমরা যেমন কিনি তেমন বিক্রি করি। দাম বাড়লে বেশি দামে বিক্রি করি আবার কমলে কম দামে বিক্রি করি। আমাদের লাভ তো কম তাই মালামালও কম কিনি আবার বিক্রিও কম হয়।