২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১১:২৫
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ১১:২৫

দেখতে দেখতে বইমেলা ৭ দিনে

বইমলোর দিনলিপি

গতকাল ২৩শে মাঘ ১৪৩০, ৬ই ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার। অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর ষষ্ঠ দিন হয়ে গেলো। প্রচুর বই বের হচ্ছে। এই ছয়দিনে সবচেয়ে বেশি বই ছাপা হয়েছে মঙ্গলবার। কাল নতুন বই বেরিয়েছে ১০৮ টি।

প্রকাশকরা সাধ্যমত নতুন বই নিয়ে প্রচারাণ চালাচ্ছে। পাঠক আকৃষ্ট করতেও কোন কিছুর কমতি নেই। বইয়ের কভার ও লেখকের সুন্দর পোষ্টারে সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমও এখন ব্যস্ত। বই কেনার অনুরোধ তো থাকছেই। লেখক সাহিত্যিক নিজেও স্ট্যাটাসে সরব আছেন।  বন্ধুস্বজনকে নিয়ে নান্দনকি মলাটের বই নিয়ে অনেক লেখক পোষ্ট দিচ্ছেন নিজের ওয়ালে। মানুষ মানুষের টানে আসছেন মেলায়। আসছেন বইয়ের টানে। লেখক প্রকাশক নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করছেন খুব সুন্দর আয়োজনে। থাকছে চা কফি পর্ব ও আলোচনা। আড্ডা।

অনেক নতুন লেখকের নতুন লেখায় সরব এবারের বইমেলা। ব্যতিক্রমী দিকও আছে। লেখা নিয়ে শিল্পীরাও বসে নেই। এসেছে লিটু আনামের নতুন বই। প্রকাশক শরফিুর রহমানের শব্দশিল্প থেকে বেরিয়েছে বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের পুনঃসংস্করণ দুটি বই। আর শ্রদ্ধাভাজন,নাট্যকার-নির্দেশক মাসুম রেজার একটি উপন্যাস এনেছে প্রকাশনা কিংবদন্তী।     

গতকাল বইমেলার ৬ষ্ঠ দিনে মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাফর সেতু। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহিদা খাতুন এবং সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবদুল খালেক। প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম পথিকৃৎ মুহম্মদ মনসুর উদ্দীনের জন্ম ও কর্মপরিসর বিশশতকে। তিরাশি বছরের জীবনে তিনি সংস্কৃতিসাধনায় মগ্ন ছিলেন তেষট্টি বছর। জীবনের এই দীর্ঘপরিসরে বাংলা লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় যে-অবদান তিনি রেখে গেছেন তা তুলনা রহিত। তিনি ছিলেন মূলত লোকসাহিত্য ও লোকসংস্কৃতির সংগ্রাহক, সংরক্ষক, সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া লোকসাহিত্যের পাঠবিশ্লেষণ, লোককবিদের জীবন অন্বেষণ, লোকসাহিত্যের তাত্তি¡ক বিষয় ও বিভিন্ন ধারার শ্রেণিবিচারসহ নানাবিধ আলোচনার মাধ্যমে বাংলা লোকসাহিত্যের বিশ্লেষণেও মনোযোগী ছিলেন।    

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের লোকসাহিত্যের পরিমন্ডলে মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন গুরুত্বপূর্ণ এক নাম। আমাদের গ্রামবাংলার লুপ্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তিনি আলোয় তুলে ধরেছেন। বাংলা লোকসাহিত্য-গবেষণায় আধুনিকতা ও আন্তর্জাতিকতার অগ্রপথিক তিনি। অসাধারণ মেধা ও প্রজ্ঞার অধিকারী মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন লোকসাহিত্যের উপাদান সংগ্রহের পাশাপাশি সেগুলো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণেও আধুনিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন।  

সভাপতির বক্তব্যে আবদুল খালেক বলেন, লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন লোকসাহিত্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ জাগ্রত করার জন্য কাজ করেছেন। লোকসাহিত্যে গ্রামের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তিনি সহজেই মিশে যেতে পারতেন। এবং অসাধারণ কীর্তি রেখে গেছেন বাঙালি সংস্কৃতিতে।

নিয়মিত আয়োজন – আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক খান মাহবুব, শিশুসাহিত্যিক শেলী সেনগুপ্তা,  গবেষক নিগার চৌধুরী এবং কবি আহমেদ শিপলু।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি সাজ্জাদ আরেফিন, ফারহান ইশরাক এবং সৌম্য সালেক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝর্ণা সরকার এবং মো. কামাল হোসেন। দলগত আবৃত্তি পরিবেশন করেন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘উদ্ভাস আবৃত্তি সংগঠন’। এছাড়াও ছিল কাঙাল মজিবরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কাঙাল হরিনাথ সাংস্কৃতিক সংগঠন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নারায়ণ চন্দ্র শীল, বিমল বিশ্বাস, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, শান্তা সরকার, শ্যামল কুমার পাল, আজমা সুরাইয়া শিল্পী এবং শারমিন সুলতানা। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন জয়সিংহ রায় (তবলা), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড),  মো. হাসান আলী (বাঁশি) এবং বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা)।  

মেলা শুরু হবে বিকেল ৩ টায় এবং চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত। আর বিকেলে ৪ টা থেকে বাংলা একাডমেরি মূলমঞ্চের অনুষ্ঠানমালা তো থাকছইে।

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি

ছবিঃ মাসুম রেজার ওয়াল থেকে

তথ্য সহযোগতিায়: সমীর কুমার সরকার, পরচিালক-জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ

Facebook
Twitter
LinkedIn