২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৬
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৪:৩৬

বইমেলার মূলমঞ্চে মানবতাবাদী দার্শনিককে স্মরণ

বইমেলার দিনলিপি

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর সপ্তম দিন। বিকেল ৪:০০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : গোবিন্দ চন্দ্র দেব শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক প্রদীপ কুমার রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জয়দুল হোসেন এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। প্রাবন্ধিক বলেন, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব নানা অভিধায় অভিহিত ছিলেন। তিনি একদিকে ছিলেন অনন্য চিন্তক, দর্শনের অধ্যাপক, সর্বজনীন প্রেম ও প্রজ্ঞার এক বিরল ব্যক্তিত্ব, সর্বোপরি একজন উঁচুস্তরের মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ। তাঁর চিন্তার পরিসর ছিল সর্বব্যাপী, তা ছিল মানবতা ও বিশ্বপ্রেম-রসে জারিত। তাঁর দর্শনচিন্তা তত্তে¡র কঠোর আবরণ থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাবহারিক জীবনে উদ্ভাসিত, প্রেম-রসে নিমজ্জিত যাতে অবগাহন করা যায় স্বচ্ছন্দে, নির্দ্বিধায়। তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে আমাদের জ্ঞানের পরিধি আরো সম্প্রসারিত করে বিশ্বপ্রেমে আবৃত করতে হবে, আর তাহলেই সেই জ্ঞান মানুষের হৃদয়তন্ত্রীতে বেজে উঠবে, তার মর্মে ও কর্মে প্রকাশ পাবে। আলোচকবৃন্দ বলেন, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী মানবতাবাদী একজন দার্শনিক। তিনি সারা জীবন সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা ও অধিকারের কথাই ভেবেছেন। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে সবধর্ম সমন্বয়ী সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টাও করেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত গোবিন্দ চন্দ্র দেব মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে গেছেন। এবং সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব একজন স্মরণীয় বাঙালি। যুক্তি, বুদ্ধি, বিবেক ও গভীর দার্শনিক দৃষ্টি দিয়ে জীবন ও জগতকে প্রত্যক্ষণ করেছেন তিনি। তাঁর জীবন, কর্ম ও দর্শন তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।
‘লেখক বলছি’ নিয়মিত অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার ইসহাক খান, প্রাবন্ধিক ও গবেষক মিল্টন বিশ্বাস, শিশুসাহিত্যিক সারওয়ার-উল ইসলাম এবং কবি মেঘ অদিতি । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি বিমল গুহ, শিহাব সরকার এবং টোকন ঠাকুর। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, কাজী মাহতাব সুমন এবং অনন্যা লাবণী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুথি পাঠ করেন জালাল খান ইউসুফী। এছাড়াও ছিল নূরননবী শান্তের পরিচালনায় ‘ভাবনগর ফাউন্ডেশন’ পরিবেশিত চর্যাপদের গান এবং মো. সাকিবুল ইসলামের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি একাডেমী’র পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সুমন চৌধুরী, শাহনাজ নাসরীন ইলা, ডা. মকবুল হোসেন, অরূপ বিশ্বাস, করবী দাস, স্নিগ্ধা অধিকারী, নূরতাজ পারভীন এবং জান্নাত-এ-ফেরদৌসী। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন এনামুল হক ওমর (তবলা), মো. নূর এ আলম (কী-বোর্ড), অসিত বিশ্বাস (এসরাজ) এবং নাজমুল আলম খান (মন্দিরা)।
আজ ২৫শে মাঘ ১৪৩০/৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪’ বৃহস্পতিবার। অমর একুশে বইমেলার অষ্টম দিন। আজকের মূলমঞ্চের অনুষ্ঠানে আহমদ শরীফ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রাজীব সরকার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন – মোরশেদ শফিউল হাসান এবং আফজালুল বাসার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী।
বইমেলা চলবে বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। গতকাল পর্যন্ত বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৬৯ টি। আরও নতুন বই আছে প্রকাশের অপেক্ষায়।

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি

ছবিঃ মোঃ জসিম উদ্দিন জসিম (শিল্পী)

Facebook
Twitter
LinkedIn