একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা শ্রদ্ধেয় মাসুদ আলী খান আজ বিকেল ৪:২০ মিনিটে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সাংস্কৃতিক অংগনে জামাল উদ্দিন হোসেন’র শোক কাটতে না কাটতে আরও একজন গুণী অভিভাবক হারালো দেশ।
মঞ্চ- টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র ৩ টি মাধ্যমেই মানুষটির অসামান্য অভিনয় আমাদের মনে করিয়ে দিবে, কি একজন জাত অভিনয় শিল্পী হারালাম আমরা। কয়েক দশক ধরে পেশাগত কাজের প্রতি আপন মহিমায় ফুটিয়েছেন গল্পের প্রতিটি চরিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় থেকে তিনি দূরে ছিলেন। বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসাতেই ছিলেন অভিনেতা। শেষবেলায় বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ – মাসুদ আলী খানের জন্ম ১৯২৯ সালের ৬ অক্টোবর। মানিকগঞ্জের পারিল নওধা গ্রামে। বাবা আরশাদ আলী খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। মায়ের নাম সিতারা খাতুন। মাসুদ আলী খান ১৯৫২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। দুই বছর পর জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরপর নূরুল মোমেনের নাটক- ‘ভাই ভাই সবাই’ নাটক দিয়ে ছোট পর্দায় উনার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় আসেন- সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’র মাধ্যমে। মাসুদ আলী খান ১৯৫৫ সালে বিয়ে করেন তাহমিনা খানকে। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেতার এক ছেলে ও এক মেয়ে। চাকরিজীবনে সরকারের নানা দপ্তরেও কাজ করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে একের পর এক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাসুদ আলী খান। নাটকই হবে পাঁচশ’র অধিক। সফল অভিনেতার-অভিনীত কয়েকটি বিশেষ সিনেমা – ‘দুই দুয়ারি’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘মাটির ময়না’সহ আরও অনেক। তবে মনে রাখার মতো কয়েকটি নাটক হচ্ছে- ‘কূল নাই কিনার নাই’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকগুলো। এখনও দাগ কাটে এইসব দিন রাত্রি নাটকের টুনির দাদু ছিলেন তিনি। সেই টুনিও আজ পরলোকে।
এখন চলে গেলেন দাদু….
মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি