মারুফ আহমেদ,বিশেষ প্রতিনিধি
ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ২৫ ফেব্রুয়ারি এক বার্তায় নির্দেশনা দেয়া হয় কয়েকটি সড়কে একমুখী যানবাহন চলাচল করবে। বাংলাদেশ পুলিশের গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ঢাকা মহানগরীর রামপুরা সড়কে আবুল হোটেল ও মদিনা হোটেল ক্রসিং, মালিবাগ রেলগেইট ক্রসিং, খিঁলগাও কমিউনিটি সেন্টার ক্রসিং এলাকার তীব্র যানজট নিরসনে এসব এলাকায় ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত একমুখী যানচলাচল করবে।

আর আছে মাত্র ২ দিন। এই নিয়ম করে যানজট নিরসনে কতটা সফলতা আসল সেটাই এখন দেখার বিষয়। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য: এই এলাকাগুলোতে প্রতিদিন সকাল এবং বিকেলের পিক আওয়ারে বেশ যানজট সৃষ্টি হয়। এই কয়দিনের পর্যবেক্ষণমূলক একমুখী যানচলাচলের সিদ্ধান্তে যানজট কিছুটা কমেছে। কমেছে জনভোগান্তি।
অফিসার (ডিএমপি) লুৎফর রহমান আরও জানালেন- ‘গণবিজ্ঞপ্তি যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ ফলাও করেছে বিষয়টা সঠিক। এটা পরীক্ষামূলক বিধায় এর সুফল নিয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ভাল সিদ্ধান্ত কি মন্দ সেটা ঐ এলাকাগুলোর পথচারীরা বলতে পারবেন একমুখী যান চলাচলে যানজট কতটা কমেছে। কেননা এসব এলাকার যানজট হচ্ছে সড়কগুলোর প্রধান সমস্যা।’
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- আবুল হোটেল ক্রসিং হতে মদিনা ক্রসিং হয়ে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার ক্রসিং। এই সড়কে যানবাহন সব আবুল হোটেল ক্রসিং হতে উভয় লেনে প্রবেশ করে মদিনা হোটেল ক্রসিংহয়ে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার ক্রসিং দিয়ে শুধুমাত্র পূর্বদিকে যেতে পারবে। এই নির্দেশনার মাধ্যমে সর্বসাধারণকে নোটিশ করা হয়-খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে পরিবহনগুলো খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার ক্রসিং হতে রাইট টার্ন না করে সোজা পশ্চিমে মালিবাগ রেলগেইট ক্রসিং হয়ে রাইট টার্ন করে রামপুরা ব্রিজের দিকে যাবে। অপর পাশে অর্থাৎ খিলগাঁও তালতলা থেকে আবুল হোটেলগামী সড়কে পরিবহন সব মদিনা হোটেল ক্রসিং থেকে রাইট টার্ন করার পরিবর্তে সোজা দক্ষিণে খিলগাঁও কমিউনিটি সেন্টার ক্রসিংয়ে এসে রাইট টার্ন করে মালিবাগ রেলগেইট হয়ে রামপুরা ব্রিজ অথবা মৌচাক মার্কেট মোড়ের দিকে যাতায়াত করতে পারবে।
পয়েন্টগুলোতে একমুখী যাতায়াতে প্রতিটি পরিবহন চালক ও গাড়ির মালিকরা ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তির প্রতি সম্মান জানিয়েছে। ৭ দিন নিয়ম রক্ষা করে বাংলাদেশ পুলিশকে সহযোগিতাও করেছে।
আর মাত্র ২ দিন এই গণবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা বলবৎ থাকতে এই সড়কগুলোতে নিয়মিত যাতায়াতকারী জনসাধারণ একমুখী যানচলালে সন্তুষ্ট হতে পারছে না। বাইকার (বিএমসি) আহসান আকতার জোয়ারদার শর্টকার্ট আবুল হোটেল দিয়ে নিজের বাসায় বাসাবো যেতে না পেরে অভিযোগের সুরে বললেন- ‘ বেসিক্যালি যারা বাসাবো বা খিলগাঁও থেকে মালিবাগ চৌধুরিপাড়া হয়ে গুলশান-বনানি বা মহাসড়কেরর দিকে যাবে তাদের জন্য হচ্ছে খুবই সমস্যা এই জন্য যে, আগে আমরা মালিবাগ রেলগেট ক্রসিং না গিয়ে খুব কম সময়ে খিলগাঁও ‘কেএফসি’ ট্রাফিক পয়েন্ট ব্যবহার করে আসা-যাওয়া করতাম। এটা সবাই জানে চৌধুরিপাড়া দিয়ে খুব সহজে রামপুরা মেইনরোডে চলে যাওয়া যায়। আহসান আরও বললেন-‘ এখন রাস্তাটা বন্ধ করে দেয়ার জন্য এই রাস্তাটা ঘুরিয়ে দিয়েছে। মালিবাগ রেলগেইট যে যাব, রাস্তাটা অতিজ্যামে সরু হয়ে থাকে সবসময়। রেলক্রসিং বারো মাস যানজট। প্রচন্ড রকমের সমস্যায় পরেছি আমরা। আমরা তো মোটরসাইকেল নিয়েই ইজিলি যেতে পারছি না। বড় বাহনের ক্ষেত্রে এটা আরও ভয়ানক বিষয়। আমার মনে হয় এই সড়কগুলোতে একমুখী যানচলাচলের কড়াকড়ি না করাই ভাল ছিল।
হাবিবুর রহমান নয়ন এই পথেই মেয়েদের স্কুলে ও কোচিংয়ে দিয়ে আসতে যান। তিনি ৭ দিন নির্দেশনা মেনেও চলেছেন। হাবিবুরের ভাষ্য- এই সড়কগুলো একমুখী না করে বিকল্প কি করা যেত সেটা এই নির্দেশনা স্কেচম্যাপ ছাড়া আপনি আর কিভাবেই বা কল্পনা করবেন? আমার মনে হয় একদিনের সমস্যা ফেস করে সমাধান করা উচিৎ না। আরো কয়েকদিন পার হোক।’
৮ মার্চ ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর গণবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনার মেয়াদ শেষ হবে। এই নির্দিষ্ট মেয়াদী একমুখী সড়কে যান চলাচল কতটা ফলপ্রসু হলো-সেটা এই কয়েকটি দিন উক্ত সড়ক গুলোতে নিয়োজিত ট্রাফিকপুলিশ, খণ্ডকালীন সেচ্ছাসেবক(ছাত্র) ও ট্রাফিক সার্জেন্টদের মুক্ত আলোচনা থেকেই উঠে আসতে পারে এই নির্দেশনার মেয়াদ আবার নতুন করে বাড়ানো দরকার আছে- কি- না।