২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৪১
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / বিকাল ৫:৪১

ভারতের দুই টিকা উৎপাদকের লড়াই

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেয়া এখনো শুরু হয়নি, সবেমাত্র ছাড়পত্র পেয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারত বায়োটেক। এর মধ্যেই দুই উৎপাদক সংস্থার প্রধান কর্তা কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লেন। শুরু হয়ে গিয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। অভিযোগের বন্যা। সিরাম-কর্তা আদার পুনাওয়ালা যেমন ভারত বায়োটেকের টিকার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। আর ভারত বায়োটেকের কর্তা কৃষ্ণ এম এল্লার অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ করেছেন।

শুরু করেছেন পুনাওয়ালা। তিনি ভারত বায়োটেকের নাম না করে বলেছিলেন, বায়োনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ডের টিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত। বাকি সবই পানির মতো নিরাপদ। তিনি যখন এই কথা বলছেন, তখন ভারত বায়োটেকের টিকা ড্রাগ কন্ট্রোলারের অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। ফলে আক্রমণ কোন দিকে তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

এরপরই গর্জে উঠেছেন হায়দরাবাদ ভিত্তিক ভারত বায়োটকের প্রধান। কৃষ্ণ এম এল্লারের দাবি, তাদের টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মাত্র ১৫ শতাংশ। আর অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ৬০ শতাংশ। যাদের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের চার গ্রাম প্যারাসিটামল দেয়া হয়েছে। তারপরও এই অবস্থা। এখানেই থামেননি তিনি। রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে কৃষ্ণা বলেছেন, ”আমরা বিজ্ঞানী। আমরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করি। তারপর কেন আমাদের এই ধরনের আক্রমণ সহ্য করতে হবে?”

আট ডিসেম্বর বায়োনটেক ও ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নেন ৯০ বছরের মার্গারেট৷ যুক্তরাজ্যে প্রথম আট লাখ টিকা পাবেন তার মতো প্রবীণ, সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীসহ বাকি বয়স্ক নাগরিকরা৷ ফাইজারের কাছে মোট চার কোটি ডোজ টিকার অর্ডার দিয়েছে দেশটি; যার মাধ্যমে দুই ডোজ করে দুই কোটি মানুষের ভ্যাকসিনের নিশ্চয়তা মিলছে৷ পাঁচ কোটি ত্রিশ লাখ নাগরিকের সবাইকে টিকা দিতে যুক্তরাজ্যকে নির্ভর করতে হবে অন্য কোম্পানিগুলোর উপরে৷

তার দাবি, ”অ্যাস্ট্রাজেনেকার মতো পরীক্ষা যদি ভারতে করা হতো, ভারতীয় রেগুলেটার তা হলে কোম্পানি বন্ধ করে দিত।” আসলে অক্সফোর্ডের টিকা পরীক্ষার সময় অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছিল। একটা গ্রুপকে প্রথমে অর্ধেক ডোজ এবং পরে পুরো ডোজ দেয়া হয়। কৃষ্ণার কটাক্ষ সেদিকেই। তার দাবি, ভারত বায়োটেকের টিকা ২৫ হাজার ভারতীয়ের উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর কোনো কোম্পানির ভারতে এই রেকর্ড নেই।

কৃষ্ণার অভিযোগ. অক্সফোর্ডের টিকা প্রথম বছরে দুবার দেয়ার পর দ্বিতীয় বছরে আর দেয়া যাবে না। দরকার হলেও নয়। কিন্তু তাদের টিকা দেয়া যাবে।

সিরাম কর্তা অবশ্য এই সব অভিযোগের কোনো জবাব দেননি। তবে প্রশ্ন উঠেছে, কেন দুই টিকা উৎপাদক সংস্থা এই ভাবে একে অপরকে আক্রমণ করলেন? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ”দুই সংস্থার লক্ষ্য হলো ভারত তো বটেই, অন্য দেশের বাজার দখল করা। তাই নিজেদের টিকা কতটা ভালো তা তারা বেশি করে দেখাতে চাইছেন। আর ভারত বায়োটেক নিয়ে যেহেতু বিরোধীরাও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, তাই তাদের উপর চাপ আরো বেশি ছিল। সে জন্যই এই আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণ।”

Facebook
Twitter
LinkedIn