রাত পোহালেই দেশে আসবে ভারতের উপহার দেওয়া ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। এগুলো প্রয়োগে সারাদেশে মোট ৪২ হাজার কর্মী কাজ করবেন। এর মধ্যে থাকছেন টিকাদানে প্রশিক্ষিত পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার স্বেচ্ছাসেবীরা।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ‘সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং আগে যারা টিকা নিয়ে কাজ করেছেন তারাই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবেন। সুষ্ঠুভাবে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে আমাদের প্রায় ৭ হাজার ৩৪৪টি টিম কাজ করবে। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে ৬ জন করে দায়িত্বে থাকবেন। তাদের মধ্যে দুইজন দক্ষ টিকাদান কর্মী এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধু রাজধানীতেই সরকারি হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ৩০০টি টিকাদান কেন্দ্র করা হবে। রাজধানীর বাইরে সারাদেশে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও পরে ইউনিয়ন পরিষদ ভিত্তিক টিকাদান কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে অধিদপ্তরের।
টিকাদানে যারা কাজ করবেন তাদের তালিকায় থাকছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, নার্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ল্যাব টেকনোলজিস্ট। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকবেন পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, সমাজকর্মী, শিক্ষক ও অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী।
সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ টিকা প্রয়োগ বিষয়ক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী টিকাদান শুরুর আগে কিছু স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবককে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরপর তারা সাতদিনের পর্যবেক্ষণে থাকবেন। টিকা ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি শনাক্ত করা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখতেই এই পরিকল্পনা।
অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, টিকাদান কর্মী নিজে টিকা নেওয়ার পর পাঁচ থেকে সাতদিন কাজে যোগ দিতে পারবেন না। তাই প্রতিটি উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশনে টিকাদান টিম গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেকোনো ওষুধের ক্ষেত্রেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে আমার মনে হয়, ভ্যাকসিন গ্রহণ করা খুব কম মানুষের ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা থাকবে। আমাদের ভ্রাম্যমাণ টিম থাকবে, টিকাদান কেন্দ্রে প্রাথমিক ওষুধ লাগলে দ্রুত সংগ্রহের ব্যবস্থা থাকবে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র যতদূর সম্ভব প্রস্তুত থাকছে। এর সহায়ক হিসেবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি থাকবে।’
সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকারের ৩ কোটি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে বলে গত ১৮ জানুয়ারি সাংবাদিকদের জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের উপহার দেওয়া টিকার চালান গ্রহণ করবেন তিনি। এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়োজাহাজে আসবে এগুলো।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।