রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। বুধবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পৃষ্ঠা ১০ কলাম ১
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডামকে ভর্তি করানোর পর হাসপাতালের চিকিৎসকসহ মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে আরো কিছু নতুন ওষুধ যোগ করা হয়েছে। ওনার আরো কিছু পরীক্ষা করতে হবে। হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে এসব চেকআপ করা হচ্ছে। ম্যাডামের করোনার কোনো উপসর্গ নেই। উনার অবস্থা স্থিতিশীল। উনি ভালো আছেন।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন কিছু পরীক্ষা আছে যেগুলো করতে ২৪ ঘণ্টা সময় নিতে হয়।কিছু কিছু পরীক্ষা আছে এগুলো করতে হলে দুইদিনের প্রস্তুতি লাগে। কারণ গত দেড় বছর ধরে আমরা হাসপাতালে নিয়ে ওনার যেসব পরীক্ষা করা দরকার সে পরীক্ষাগুলো করাতে পারিনি। তার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেখানে বেগম জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এফএম সিদ্দিকী, আমি এবং ডা. মামুনও রয়েছেন।
ডা. জাহিদ বলেন, মেডিকেল বোর্ড ম্যাডামের আগের রিপোর্টগুলো পর্যবেক্ষণ করেছে। আরো কিছু পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করেছে। সে সুপারিশক্রমে ওনার রুটিন চেকআপ শুরু হয়েছে। বুধবার কিছু পরীক্ষা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কিছু পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা আশা করছি রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ম্যাডামকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবো। খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান রিপোর্ট ভালো এসেছে বলে জানিয়েছেন ডা. জাহিদ।
মঙ্গলবার রাতে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান (চেস্ট), আল্ট্রাসনো, হৃদযন্ত্রের ইসিজি ও ইকো ইত্যাদি পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যায় ভুগছেন।
গত ১১ই এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হয়েছিল কিন্তু ফলাফল পজেটিভ আসে।
‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরো ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এখন খালেদা জিয়াসহ চারজন করোনা পজেটিভ।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫শে মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।