বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেছেন, আজকে ভোরের দিকে খালেদা জিয়া শ্বাসকষ্ট অনুভব করেছিলেন। তখন চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে সিসিইউ স্থানান্তরিত করা হয়। খালেদা জিয়া স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরার ৩০০ ফিট এলাকায় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করার জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, আপনাদের জানাতে চাই, যেকোনো পরিস্থিতি মানুষের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এরপর তারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) তাদের দেশী-বিদেশী কনসালটেন্টদের সাথে পরামর্শ করছে। আমরা পরে বিস্তারিত জানতে পারবো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, করোনার কেয়ার ইউনিটের রোগী স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। খালেদা জিয়ারও তাই। এর বেশি এখন বলা সম্ভব নয়। আপনাদেরকে বলি, আমি কয়েক মিনিট আগে ম্যাডামের সাথে দেখা করে এসেছি। তার সাথে কথা বলে আসছি। তাকে জিজ্ঞাসা করেছি, কেমন আছেন। তিনিও জবাব দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপির চেয়ারপারসনে মিডিয়া ইউংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ নয়া দিগন্তকে জানান, নতুন করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি স্থিতিশীল আছেন, ভালো আছেন। আর আপনারা আগেই জানেন যে তিনি নন-কোভিড রোগী হিসেবে চিকিৎসাধীন আছেন। এসময় তিনি বলেন, আপনাদের জানিয়ে রাখি যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) ইতিপূর্বে যে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিলো গতকাল সেগুলোর রিপোর্ট নিয়ে মেডিকেল বোর্ড পর্যালোচনা করেছে। এসব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ড আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে। সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে মেডিকেল বোর্ড সেগুলোর রিপোর্ট দেখে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপার্সনের চিকিৎসার জন্য তার ব্যক্তিগত তিন চিকিৎসকসহ ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী, ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডা. এজেডএম জাহিদ, ডা. শাহাবুদ্দিন, ডা. সিনা, ডা. ফাহামিদা বেগম, ডা. মাসুম কামাল, ডা. আল মামুন (মেডিসিন). ডা. সাদিকুল ইসলাম, ডা. তামান্না।
এর আগে ১০ এপ্রিল করোনাভাইরাসের নমুনা জমা দেয়া হলে ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার পজিটিভ আসে। এরপর ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নমুনা জমা দেয়ার পর আবারো ফল পজিটিভ আসে। পরে গত মঙ্গলবার রাতে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা’র জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হয়।