২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১০:৫৪
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / রাত ১০:৫৪

আওয়ামী লীগের জন্মই বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে: ফখরুল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র যদি ‘তামাশা’ হয়, তাহলে আপনাদের জন্মইতো সেই ‘তামাশা’ থেকে। বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কেন ‘তামাশা’ বলেন? আপনারাতো বাকশাল করে নিজেদের নাই ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব অনেক কথা বলেন, তার একটা কথার উত্তর না দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিল নাকি তামাশা। আরে আপনাদের জন্মইতো ওই বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে। ৭৫ সালে আপনাদের নেতা এবং আপনারা বাকশাল করে নিজেদেরকে নাই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আমরা বাকশাল, আওয়ামী লীগ নাই। পরে যখন জিয়াউর রহমান সাহেব আপনাদের সুযোগ দিলো।আপনারা নিবন্ধন করেছেন। আপনাদের তিনি আবার নিয়ে এসেছেন ওই বহুদলীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে। এখন আপনারা বলেন তামাশা?
হাসানুল হক ইনু একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। গণবাহিনী তৈরি করেছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেককে হত্যা করেছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কালের চক্রে ওই হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হয়ে সরকারের লোকে পরিণত হন। তিনি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে চান, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কোথায়? কথা বলেন না কেন? বলেন কোথায়? একজনও স্লোগান দিয়েছেন দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য? একটা স্লোগানও দিয়েছেন? দেননি। আমি একটা স্লোগানও শুনিনি ‘দেশনেত্রীর মুক্তি চাই’। কার জন্য রাজনীতি করছেন? কেন রাজনীতি করছেন? যে নেত্রী তার সারাটা জীবন এই দেশের মানুষের জন্য দিয়েছেন। ৭১ সাল থেকে শুধু নির্যাতন আর নির্যাতন ভোগ করেছেন।
‘বৃদ্ধদের মাধ্যমে পরিবর্তন হয় না’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিবর্তন হয় তরুণ-যুবকদের হাত দিয়ে। বিখ্যাত একটি কথা আছে, ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। এই কথাগুলো যদি মনে রাখতে না পারেন, তাহলে এই ভয়াবহ দানবের সাথে কিভাবে যুদ্ধ করতে পারবেন। দানব কিন্তু ছোটখাটো দানব নয়, ভয়াবহ দানব-ফ্যাসিস্ট। পৃথিবীর কোনো দেশে ফ্যাসিস্টদের সরানো এত সহজে সম্ভব হয় না। এটা এরশাদ নয়, আইয়ুব খান নয় যে রাস্তায় আন্দোলন করবেন আর সরে যাবে। একটা শিক্ষিত সেনাবাহিনী ছাড়া কখনও যুদ্ধে জয় করা যায় না।
নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, আপনাদের মনে একটা গৌরব রাখতে হবে। আমি সেই দল করি যে দলের নেতা জিয়াউর রহমান। আমি সেই দল করি যে দলের নেতার জানাজার সময় লাখ লাখ মানুষ হাউমাউ করে কেঁদেছেন। আমি সেই দল করি যে দলের নেতা কোনো দিন চুরি করেননি, তার চরম শত্রুও বলবে না যে সে চুরি করেছে। এগুলোই শক্তি। এই শক্তি নিয়ে এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা গণতন্ত্র ফেরত চাই। আমরা ভোটের অধিকার চাই, ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই।
‘এখন আর সময় নেই’ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগে নিজেদের তৈরি করে ফেলেন। শক্ত হয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে আমরা জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। দাবি একটাই। চলে যাও, চলে যাও। রেহাই দেও বাংলাদেশকে। কথা পরিষ্কার, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে- নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। তা না হলে এই বাংলাদেশের মানুষ জানে কিভাবে তাদের অধিকার আদায় করতে হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ।

Facebook
Twitter
LinkedIn