২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১২:৫১
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / দুপুর ১২:৫১

কক্সবাজারের ৪১৩ গ্রাম প্লাবিত, ২৩ লাশ উদ্ধার

কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড়ি ঢলে ভেসে যাওয়া আরো দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই নিয়ে বুধবার বিকেল পর্যন্ত তিন দিনে বন্যায় ২৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

বুধবার বিকেলে পৃথক ঘটনায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

মৃতরা হলেন উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ধইল্ল্যারঘোনার হাবিবুর রহমানের ছেলে আকবর আলী (৩১) ও মালিয়ারকুল এলাকার মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রুবেল (২২)।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে উখিয়ার কমবেশি সব ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপজেলায়। পাহাড়ি ঢলে ভেসে বুধবার দুপুরে একজনের ও সন্ধ্যা ৬টায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মৃতরা সবাই পাহাড়ি ঢলে ভেসে নিখোঁজ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের ৪১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৫৫ হাজার ১৫০টি পরিবারের আড়াই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে তিন দিন ধরে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একইসাথে ঝড়ো হওয়ার কারণে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, কক্সবাজার জেলা ৭১ ইউনিয়ন ও চার পৌরসভার মধ্যে ৪১ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। যেখানে গ্রামের সংখ্যা ৪১৩টি। ওইসব গ্রামের ৫৫ হাজার ১৫০টি পরিবারের আড়াই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে ২৩ জনের মৃত্যু হয়। এখনো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। প্লাবিত এলাকায় ৩০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি মানুষ কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, কক্সবাজার সদর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৫৮ গ্রাম, রামু উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৩৫ গ্রাম, চকরিয়া উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের ১০০ গ্রাম, পেকুয়া উপজেলার ২ ইউনিয়নের ৬ গ্রাম, মহেশখালী উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৩৮ গ্রাম, উখিয়া উপজেলার ২ ইউনিয়নের ১২০ গ্রাম, টেকনাফ উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ৫৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এই তথ্যে কুতুবদিয়া উপজেলার প্লাবিত এলাকার সংখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে কুতুবদিয়া উপজেলায় অনন্ত ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।

বৃষ্টিতে পাহাড় ধস ও পানিতে ভেসে বুধবার ১২ জন, মঙ্গলবার ৬ রোহিঙ্গাসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে পাশের উপজেলা নাইক্যংছড়িতে পৃথকভাবে পাহাড়ি ঢলে ভেসে যাওয়া তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল জানান, প্লাবিত এলাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৩৫ টন চাল ও ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনের আরো জরুরি বরাদ্দ দেয়া হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn