পদ্মাসেতুর পিলারে ধাক্কা দেওয়া রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার কর্মকর্তা দেলোয়ারুল ইসলাম এবং হুইল সুকানী আবুল কালাম আজাদকে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিএ)। একইসঙ্গে ওই ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বিআইডব্লিউটিএর চিফ পার্সোনাল অফিসার মানসুরা আহ্মেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বরখাস্তের বিষয়ে বলা হয়, সোমবার (০৯ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় সংস্থার রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শিমুলিয়া বাংলাবাজার নৌরুটে চলাচলের সময় ফেরিটি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে, যা বাণিজ্যিক বিভাগের মাওয়া ঘাটস্থ দপ্তর থেকে মৌখিকভাবে জানা যায়। ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। এ জলযানে ভারপ্রাপ্ত মাস্টার কর্মকর্তা হিসেবে দেলোয়ারুল ইসলাম এবং হুইল সুকানী হিসেবে আবুল কালাম আজাদ কর্মরত ছিলেন। জলযানে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত মাস্টার অফিসার এবং হুইল সুকানী দক্ষতার সঙ্গে ফেরিটি পরিচালনা ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো মর্মে প্রতীয়মান হয়। দায়িত্বপূর্ণ কর্মচারী হিসেবে ফেরিটি অত্যন্ত সাবধানতার সহিত পরিচালনা করা তাদের উচিত ছিল। সেতুর নিচে এ ধরনের দুর্ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাদের এহেন কার্যকলাপ কর্মচারী চাকরি নিয়ম শৃঙ্খলার পরিপন্থি ও শান্তিযোগ্য অপরাধ। তাদের এহেন কার্যকলাপ অদক্ষতার পরিচয় বহন করে।
‘এমতাবস্থায় রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীররের উল্লিখিত দুর্ঘটনার জন্য ওই জলযানের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার কর্মকর্তা দেলোয়ারুল ইসলাম এবং হুইল সুকানী আবুল কালাম আজাদকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা-১৯৮৯ এর ৪৬ (১) ধারা মোতাবেক তাদেরকে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করতে ডিসিপিএম (ফ্লিট) দপ্তরে নিয়মিত হাজিরা থাকার নির্দেশ দেওয়া হলো। বরখাস্তকালীন সময়ে তারা বিধি মোতাবেক খোরাকী ভাতা প্রাপ্য হবেন। যথাসময়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রজু করা হবে।’
উল্লিখিত সার্বিক বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার প্রধান করা হয়েছে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (কারিগরি) মো. রাশেদুল ইসলাম।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিআইডব্লিউটিসি ঢাকার জিএম (মেরিন) মুহম্মদ হাসেমুর রহমান চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর (নৌসংরক্ষণ ও পরিচালন) মো. শাহজাহান, বিআইডব্লিউটিসি মাওয়ার এজিএম (ইঞ্জি.) মো. রুবেলুজ্জামান এবং বিআইডব্লিউটিসি মাওয়ার এজিএম (মেরিন) আহম্মদ আলী।
তদন্ত কমিটিকে সার্বিক বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের শনাক্তকরণ এবং দায়-দায়িত্ব নিরূপণসহ সুপারিশ সহকারে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী তিন দিনের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএয়ের চেয়ারম্যান কাছে দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।