রূপালী গিটার ফেলে চলে গেছেন কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু। তবে বাংলা সংগীতের আকাশে হয়ে আছেন ধ্রুবতারা।
দেশীয় ব্যান্ড সংগীতের এই অগ্রপথিক যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে সোমবার তিনি পা দিতেন ৬০ বছরে। বিশেষ এই দিনে ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে স্মরণ করছেন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায়।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন সবার প্রিয় ‘এবি’।
আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, লিড গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার ও প্লেব্যাক শিল্পী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজের গড়া ব্যান্ড দল এলআরবি’র লিড গিটারিস্ট ও ভোকাল হিসেবে কাজ করে গেছেন। এর আগে সত্তরের দশকের শেষে ‘ফিলিংস ব্যান্ড’-এ যোগ দেন। এরপর দশ বছর সোলস ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট হিসেবেও কাজ করেছিলেন।
আইয়ুব বাচ্চু ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এলআরবি। এরপর ‘রূপালি গিটার’, ‘রাত জাগা পাখি হয়ে’, ‘মাধবী’, ‘ফেরারি মন’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘বার মাস’, ‘হাসতে দেখ’, ‘উড়াল দেব আকাশে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি,’ ‘সেই তুমি কেন অচেনা হলে’, ‘একদিন ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘মেয়ে ও মেয়ে’, ‘কবিতা সুখ ওড়াও’, ‘এক আকাশ তারা’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান এই ব্যান্ড দলটি থেকে উপহার দিয়েছেন তিনি। যে গানগুলো এ প্রজন্মের মানুষের মুখে মুখে ঘুরে।
আইয়ুব বাচ্চু সংক্ষেপে শ্রোতা-ভক্তদের কাছে এবি নামে পরিচিত। মূলত রক ঘরানার গান করলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল এবং লোকগান দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন গুণী এই শিল্পী।
গীটারের ছয় তার যেন তার জন্যই তৈরি হয়েছিল। গানের বাইরে গীটারের সঙ্গে সখ্যতা আর বোঝাপড়া ছিল দুর্দান্ত। তাইতো তাকে বলা হয় গীটারে জাদুকর। গীটারের ছয় তারে বেঁধেছেন আনন্দের, আবার কখনো বেদনা ভরা পঙক্তিমালার সুর।
‘ফেরারী মন হয়তো কোনো বাঁধাই মানে না’ গানের কথার মতোই সব বাঁধা উপেক্ষা করে আজ আইয়ুব বাচ্চু না ফেরার দেশের বাসিন্দা। আইয়ুব বাচ্চু গেয়েছিলেন ‘চলো বদলে যাই’। বদলে গিয়ে অচেনা ভুবনে রয়েছেন। সেখান থেকে আর না ফিরলেও আইয়ুব বাচ্চু গান-সুর আর সৃষ্টিতে বেঁচে থাকবেন বাংলার সংগীতপ্রেমীদের মনে অনন্তকাল।