আফগানিস্তানের জালালাবাদে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। এ ঘটনায় তিন জন নিহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দুই জন প্রত্যক্ষদর্শী ও একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বুধবার (১৮ আগস্ট) শহরের একটি চত্বরে স্থানীয়রা দেশটির জাতীয় পতাকা উড়ানোর চেষ্টা করলে তালেবান যোদ্ধারা তাদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে তিন জন মারা যান।
এদিকে হাজার হাজার আফগান দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা তাদের বিমানবন্দর যেতে বাধা দিচ্ছে। যাদের কাছে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনীয় নথিপত্র আছে তাদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তালেবানের বাধা পেরিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করা এক ব্যক্তি বলেন, পুরো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। তালেবান ফাঁকা গুলি ছুড়ে, লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে, একে৪৭ রাইফেল দিয়ে মারধর করে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তালেবানের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছাতে মরিয়া লোকজনের ভিড়ের চাপ সামলাতে তাদের কমান্ডার ও সেনারা ফাঁকা গুলি ছুড়েছে, তবে কাউকে আহত করার উদ্দেশ্য ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রের উপ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওয়েনডি শেরম্যান ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের জানান, আমরা আশা করছি তালেবান আমেরিকার নাগরিক, তৃতীয় যেকোন দেশের নাগরিক এবং সব আফগান যারা স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়তে চাচ্ছে তাদের নিরাপদে এবং কোনো হয়রানি ছাড়াই কাজটি করতে দেবে।
তবে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে চার হাজার সেনা সেখানে আটকে পড়াদের কাবুল বিমানবন্দরে আনতে কোনো সহায়তা করতে পারছে না, কারণ বিমানবন্দরের নিরাপত্তাও দেখতে হচ্ছে তাদের।
ওয়াশিংটনে একটি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন তিনি, স্বীকার করেছেন নাগরিকদের সরিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মাইলি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এখন স্থিতিশীল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রমে তালেবান কোনো হস্তক্ষেপ করছে না।
এদিকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে নিজ দেশের নাগরিক, বিদেশি ও মিত্র আফগানদের সরিয়ে নিতে ফ্লাইট পরিচালনা সমন্বয়ের জন্য জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৃহস্পতিবার একটি ভারচুয়াল বৈঠক করবেন।