২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৬:৪৪
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি / সকাল ৬:৪৪

খালেদা জিয়ার ১১ মামলার শুনানি ২০ অক্টোবর

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাসহ মোট ১১টি মামলা শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। আগামী ২০ অক্টোবর মামলাগুলোর শুনানি হবে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানির এ তারিখ রাখেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া।

গত বছর ১০ আগস্ট এই ১১ মামলার শুনানির জন্য তারিখ ধার্য ছিল। তবে করোনা মহামারীর কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তা এতদিন হয়নি। ফলে শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।

খালেদার বিরুদ্ধে ১১টি মামলার মধ্যে দারুস সালাম থানায় রয়েছে নাশকতার আট মামলা, যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা ও একটি নাশকতার মামলা এবং সিএমএম কোর্টে রয়েছে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। মামলাগুলোর কার্যক্রম খালেদা জিয়ার পক্ষে সাময়িক স্থগিত করেছিল হাইকোর্ট।

মামলাগুলোর মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় চার্জশিট গ্রহণের বিষয়ে শুনানির কথা ছিল গত বছরের ১০ আগস্ট। ওই দিনই অপর ১০ মামলার ওপর চার্জ শুনানির দিন ধার্য ছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি সিএমএম আদালতে খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি করা হয়।

আর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দুটির অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় একটি বাসে পেট্রোল বোমা হামলা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামের এক যাত্রী।

ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় দুটি মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক এসআইকে এম নুরুজ্জামান। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা, অপরটি নাশকতার মামলা।

মামলা দুটিতে ওই বছরের ৬ মে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক বশির আহমেদ। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে দারুস সালাম থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে আটটি মামলা দায়ের করা হয়। সবগুলো মামলাতেই খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।

২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে আদালতে মামলাগুলোয় চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। সবগুলো মামলায় খালেদা জিয়াকে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। পরে খালেদা জিয়া মামলাগুলোয় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে সাড়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।

প্রথমে ২০০৮ সালের ৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর দুই দফা বাড়ানো হয় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ।

এর মধ্যে করোনাভাইরাসেও আক্রান্ত হয়েছেন খালেদা জিয়া। গত ১৪ এপ্রিল তার করোনায় আক্রান্তের খবর আসে সংবাদমাধ্যমে।

প্রথম দিকে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেন খালেদা। পরে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত ৯ মে তার করোনা পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ আসে। তার পরও শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে থাকতে হয় খালেদা জিয়াকে। কিছুদিন সেখানকার করোনারি কেয়ার ইউনিটেও (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল তাকে। ৫৪ দিন চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে দল থেকে জানানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার চোখেও অপারেশন করা হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn