বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ইলিশ। ভোজনরসিক মানুষের পাতে বর্ষাকালে ইলিশ থাকবে না বিষয়টি ভাবা যায় না। আমাদের দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ। কারণ এটি স্বাদে, গুণে অতুলনীয়। সেসঙ্গে পুষ্টিতেও ভরপুর ইলিশ মাছ। সরষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, ইলিশের টক, ভাজা, ইলিশের ডিম আরো কতভাবে ইলিশ খাওয়া যায়। স্বাদের পাশাপাশি ইলিশের যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা আমাদের জানা উচিত।
রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক : সামুদ্রিক মাছে থাকা ইপিএ ও ডিএইচএ ওমেগা-থ্রি শরীরে ইকসিনয়েড হরমোন তৈরি রুখতে পারে। এই হরমোনের প্রভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায়। ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
করোনাকালে জিঙ্কের গুরুত্ব : ইলিশ মাছ প্রোটিন, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে। ১০০ গ্রাম ইলিশ মাছে রয়েছে ২২.৩ শতাংশ প্রোটিন৷ করোনাকালে জিঙ্কের গুরুত্ব সকলেই এতোদিন জেনে গেছেন। এ ছাড়া জিংক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব ভালো। সেলেনিয়াম আবার অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে।
বাতের ব্যাথা : ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের সঙ্গে অস্টিও আর্থ্রাইটিসের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিদিনের ডায়েটে সামুদ্রিক মাছ থাকলে বাতের ব্যাথা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
হার্টের জন্য : ইলিশ মাছ এবং ইলিশ মাছের তেল হার্টের জন্যও খুব ভালো৷ যাদের কোলেস্টেরল বেশি তারাও ইলিশ মাছ খান। কারণ ইলিশ খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে দেয়, যা হার্ট ব্লক করতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে : ইলিশ মাছে আরজিনিন থাকায় তা ডিপ্রেশনের জন্যও খুব ভালো। তা ছাড়া ইলিশ মাছ ক্যান্সার প্রতিরোধক। আবার সর্দি-কাশি প্রতিরোধেও দারুণ কার্যকরী।
ত্বকের যত্নে : ইলিশ মাছে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান। এই কোলাজেন ত্বক টাইট ও নমনীয় রাখতে সাহায্য করে।
পেটের যত্নে : খাবারতালিকায় ইলিশ মাছ রাখলে পেটের সমস্যা অনেক কম হয়। আলসার, কোলাইটিসের হাত থেকে রক্ষা করে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড।
তবে ইলিশ মাছের যে পদই রান্না করুন না কেন, খেয়াল রাখবেন তা যেন খুব বেশি ভাজা না হয়। খুব বেশি পরিমাণ মাছ ভাজা হলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় বলে মতামত বিশেষজ্ঞদের।