বহুদিন আগেই এপার, ওপার দুই বাংলা জয় করেছেন জয়া আহসান। বাকি ছিল বলিউড বিজয়। সেখানেও খুব শিগগিরি পা রাখতে চলেছেন তিনি। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির বিপরীতে দেখা যাবে বাংলাদেশের নায়িকাকে। এ কথা জানিয়েছেন পরিচালক সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়।
আগামী বছরের পুজোর আগে তিনি ক্যামেরাবন্দি করবেন তাঁর প্রথম রাজনৈতিক ওয়েব সিরিজ। যার পটভূমিকায় ১৯৬৭-র নকশালবাড়ি আন্দোলন। তৎকালীন বিতর্কিত পুলিশ অফিসার রুণু গুহ নিয়োগীর লেখা ‘সাদা আমি কালো আমি’ উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি তিনটি ভাষায় তৈরি হতে চলেছে এই সিরিজ। সায়ন্তনের কথায়, ‘এখানে চারু মজুমদার হবেন নওয়াজ। জয়া তাঁর স্ত্রী লীলা মজুমদার।’
পরিচালকের কথায়, বিতর্কিত পুলিশ অফিসারের চোখ দিয়েই দেখানো হবে গোটা সিরিজ। রুণু গুহ নিয়োগীর চরিত্রে দেখা যাবে রণিত রায়কে। এ ছাড়াও, প্রাথমিক কথা হয়েছে সব্যসাচী চক্রবর্তীর সঙ্গে। তাঁকে সম্ভবত দেখা যাবে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের ভূমিকায়। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে ভাবা হয়েছে চারু মজুদারের অন্যতম সঙ্গী কানু সান্যালের চরিত্রে। এ ছাড়া, জ্যোতি বসুর চরিত্রের জন্য প্রাথমিক ভাবে বাছা হয়েছে দুই বলিউড অভিনেতার নাম। তাঁরা পরেশ রাওয়াল এবং বোমান ইরানি। সায়ন্তনের দাবি, ‘শারীরিক সাদৃশ্য মেনে আমাদের প্রথম পছন্দ পরেশজি। বাকিটা ক্রমশ প্রকাশ্য।’
চলতি বছরের পুজোর পরে আরও এক ঝাঁক তারকার নাম সামনে আনবে সায়ন্তন-অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনা সংস্থা সিনেক্স।
ইদানিং, ওয়েব সিরিজ মানেই হয় রহস্য-রোমাঞ্চ অথবা ভৌতিক গল্প। নয়তো অপ্রয়োজনীয় সাহসী দৃশ্য সম্বলিত গল্প। সেই প্রথাকে ভাঙতেই কি বিতর্কিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বেছে নেওয়া? সায়ন্তনের যুক্তি, ‘মুম্বাইয়ের পটভূমিকায় যদি ‘সেক্রেড গেমস’ বা উত্তরপ্রদেশকে নিয়ে ‘মির্জাপুর’ সিরিজ তৈরি হতে পারে তা হলে বাংলাই বা পিছিয়ে থাকবে কেন? পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলনের ইতিহাসও তুলে ধরার সময় এসেছে। সেই জায়গা থেকেই আমার এই উপন্যাস নির্বাচন।’
জানা গেছে, গত দেড় বছর ধরে চিত্রনাট্যের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছেন পরিচালক। তাঁকে সাহায্য করেছেন ‘অন্ধাধুন’ ছবির লেখক অরিজিৎ বিশ্বাস। সায়ন্তন জানিয়েছেন, আগামী দিনে বলিউডের তাবড় চিত্রনাট্যকার যোগ দেবেন তাঁর সঙ্গে।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনটি পর্বে দেখানো হবে এই সিরিজ। প্রথম পর্বে থাকবে ১৯৪৭-১৯৭২ সাল। ১৯৭২-১৯৯০ পর্যন্ত উঠে আসবে দ্বিতীয় পর্বে। শেষ পর্বে থাকবে তার পরের সময় থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট। দ্বিতীয় ভাগে থাকবেন কিষেণজি। দেখা যাবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। পুরোটাই টানটান রাজনৈতিক সিরিজ। তাই চাপা টেনশনে ইতিমধ্যেই ভুগতে শুরু করেছেন পরিচালক। তাঁর ইচ্ছে, কলকাতা, মুম্বাই, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশের পাশাপাশি চিন, রাশিয়াতেও ছবির শ্যুট করার। তার আগে চলতি বছরে পুজোর পরেই মুক্তি পাবে সায়ন্তনের বড় ছবি ‘ঝরা পালক’।
জীবনানন্দ দাশের জীবন নিয়ে তৈরি এই ছবিতে কবির স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। পরিচালকের কথায়, ‘আমার জয়া যোগ তখন থেকেই। জয়া অনুরোধ জানিয়েছিলেন, জাতীয় স্তরের কাজে তাঁকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। সেই জায়গা থেকেই লীলা মজুমদারের চরিত্রের জন্য বলতেই এক কথায় রাজি তিনি।’ অল্পবয়সী কবির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিণত কবি ব্রাত্য বসু। এছাড়াও, মুক্তির পথে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উপরে তৈরি ড্যকু সিরিজ ‘আমি সৌমিত্র’।
সূত্র : আনন্দবাজার