গতকাল রবিবার এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, একটা আলাদা (রেল) সেতু হয়ে যাচ্ছে যাতে আমি মনে করি দেশের আভ্যন্তরীণ আর্থ সামাজিক উন্নতি তো হবেই, এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা আরও সংযুক্ত হতে পারবো।
ট্র্যান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ। এই সেতুটি ভবিষ্যতে সেই সংযোগ তৈরি করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই প্রকল্পের সিংহভাগ অর্থায়ন করছে জাপান। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের মত বন্ধু যাদের সাথে আছে তাদের আর চিন্তার কিছু নেই।
বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ও জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল আহসান বলেন, যমুনা নদীর উপরে যে বঙ্গবন্ধু সেতু রয়েছে, সেই সড়ক সেতুর ৩০০ মিটার উজানে এটি নির্মিত হচ্ছে, যার দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার। এই সেতুতে যে রেললাইন রয়েছে তার উপর দিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন রুটের ৩৮টি ট্রেন চলাচল করে। রেল সেতুটি নির্মাণ হয়ে গেলে সেই সংখ্যা ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সেসময় নতুন রুট চালু করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের যে রেল সেতুগুলো রয়েছে তাতে আছে একটি করে লাইন রয়েছে। এই সেতুটিতে তাহকে দুটি রেল লাইন। এর সুবিধা হচ্ছে কোনো ট্রেনকে সেতু পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। সেতুতে একসঙ্গে দুটো ট্রেন দুদিকে চলে যেতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, যমুনা নদীর উপরে বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুতে যে রেললাইন রয়েছে তা পার হতে দুইপাশে গাড়ি ও ট্রেন উভয়কেই অপেখা করতে হয়। এছাড়াও সড়ক সেতু হওয়ায় ওজন ও গতির বিষয়েও সীমাবদ্ধতা রয়েছে ট্রেনের।বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুতে একটি ট্রেন ঘণ্টায় সর্বচ্চো ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারে। নতুন সেতুটিতে ঘণ্টায় সর্বচ্চো ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলতে পারবে। এটির উপর দিয়ে যেকোনো ওজনের মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলতে পারবে। এছাড়া এই ব্রিজটির উপর দিয়ে একাধিক লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে। সাধারণত মালবাহী ট্রেনগুলোকে প্রায়ই দুটি ইঞ্জিন দিয়ে টানতে হয়। বঙ্গবন্ধু সড়ক সেতুতে যা সম্ভব হয় না। এর কারণেই যমুনা নদীর ওপারে পার্বতীপুরের কারখানায় মেরামতের জন্য ইঞ্জিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। রেল সেতুটি নির্মাণ করা হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু রেল সেতুটির কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা ২০২৪ সালে আগস্ট মাসে নির্ধারণ করেছে সরকার। এই প্রকল্পের জন্য ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই খরচের ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন বা জাইকার কাছ থেকে ঋণ হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। বাকি অর্থ দেবে বাংলাদেশ সরকার।